পোস্টগুলি

হারানো দিনের বন্ধুত্ব - সানজিদা হোসাইন

ছবি
আজকের আকাশটা মেঘে ঢাকা, সুন্দর। এর আগেও তো বহুবার দেখেছি, আজ কিছুটা অন্য রকম লাগছে। এই মুহূর্তে আমি এক রাস্তার পাশে বসে আছি। এর আগেও অনেকবার এখানে বসেছি, বন্ধুদের সাথে একসাথে এই পথে চলছি। এই রাস্তার সাথে আমার ১০ বছরের বেশি সম্পর্ক, তাই এই রাস্তাকে আমার বন্ধুও বলা যায়। রোজ যে স্কুলে যেতাম এই পথ ধরে! তবে আজ অনেকটা শূন্যতা অনুভব হচ্ছে। নিজেকে অনেক একা মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যদি আজ আমার পাশে আরও কয়েকজন থাকত তবে বেশ ভালো লাগত। বন্ধুদের কথা বলছি। বন্ধুত্ব এক পবিত্র সম্পর্ক, যাকে মনের সব কথা বলা যায়,বিশ্বাস করা যায়। যার সাথে রক্তের সম্পর্ক নেই তবুও আপন করে নেওয়া যায়৷ যে কথা অন্য কাউকে বলা যায়না তা,বন্ধুকে বলা যায়।  একসময় ছিল যখন রোজ দিনে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ওদের সাথে কাটাতাম, হৈ চৈ করতাম, গল্প করতাম আর এখন ৮ থেকে ১০ দিনে হয়ত একবার ওদের সাথে ফোনে কথা হয়, খুব বেশি হলে দু চার মিনিটের জন্য। আজ শেষ থেকেই শুরু। হঠাৎ-ই একদিন স্কুলে গেলাম, আর আমার জীবনের সবকিছু বদলাতে শুরু করল। স্কুলে যেতে ভয় পেতাম,আম্মু আমায় অনেক বোঝানোর পরও বলতাম, আজ সারাদিন বাসায় পড়ব তবুও স্কুলে পাঠিয়ো না। চিনতাম না, জানতাম না তাদের সা

এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নিস্প্রভ আলো - আব্দুর রহমান আল হাসান

ছবি
১৯২৩ সালে উসমানী খেলাফতের বিলুপ্তির পর তুরষ্কের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নেয় ইহুদী জায়োনিজমের আদর্শ লালনকারী কামাল। (আতাতুর্ক শব্দটি ব্যবহার করছি না। কারণ, তার মতো ফ্যাসিবাদী শাসককে আমি তুর্কি জাতির পিতা হিসেবে মেনে নিতে পারি না।) কামাল রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর পরই ইসলামকে আরবদের প্রাচীন রীতি হিসেবে ভেবে তা বর্জনের ডাক দেয়। কিন্তু ইসলাম ধর্ম যাদের রক্তে মিশে আছে, তারা কিভাবে ইসলামকে বর্জনের ডাক মেনে নিতে পারে? তাই শুরু হলো মুসলিমদের গণ আন্দোলন। প্রেসিডেন্ট কামাল যখন দেখলো অবস্থা বেগতিক তখনই সেনাবাহিনীসহ আরো বিভিন্ন ফোর্স পাঠিয়ে তাদের দমানোর চেষ্টা করলো। সেই সাথে সে তুর্কির ভাষার লিখিত অক্ষরের পরিবর্তন করে ফেললো। আগে তুর্কি ভাষা লিখা হতো আরবি অক্ষর দিয়ে। প্রেসিডেন্ট কামাল তা পরিবর্তন করে ল্যাটিন অক্ষর বসিয়ে দিল। সে খেলাফত ব্যবস্থাকে সেকেলে ঘোষণা দিয়ে ইসলামী সংবিধান বাতিল করে ইউরোপের সংবিধান গ্রহন করলো। সে কুরআনকে বিলুপ্ত ঘোষণা করলো। আলেমদের তাঁড়িয়ে দিল। কাউকে বা হত্যা করলো। মুসলিম রমনীদের হিজাব পরিধান করা নিষিদ্ধ করলো। তার এই কঠোর নীতির বিরুদ্ধে আলেমরা গণ আন্দোলন শুরু করলো। তাদের মধ্যে নকশে

মা - মীম আক্তার সামিয়া

ছবি
  এলাকায় একজন মহিলা ছিলেন খু্বই সৎ। তার একটি কুড়ে ঘর ছিল । তাতে তিনি আর তার মেয়ে থাকতেন। মেয়ের বয়স যখন সাত বা আট , তখন তার বাবা মারা যায়। তারপর থেকে মা-ই তার সবকিছু । মেয়ের যেভাবে থাকলে ভালো হবে , সেভাবেই তিনি রাখতেন । মেয়েটির নাম তামান্না। তার মা গাছ থেকে ফলমূল সংগ্রহ করতেন । বন থেকে কাঠ কেঁটে বাজারে বিক্রি করতেন । এর উপার্জিত অর্থ দ্বারা তাদের জীবন চলতো । তামান্না যখন একটু বড় হলো , তখন তার মা কাছের একটি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন । সেখানে সে পড়ালেখা করতো । এভাবেই তাদের দিন কাটতে লাগলো। যখন তামান্নার বয়স ১৫ বছর তখন একদিন তার মা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তার দেখে বললেন , ভালোভাবে তোমার মায়ের সেবা-যত্ন করো । তার বাঁচার সম্ভাবনা খুব-ই ক্ষীণ। সেদিন এ কথা শুনে তামান্না কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞানই হয়ে গেল। তিনদিন নাগাত অজ্ঞান ছিল। তারা গরীব হওয়ায় এতোদিনে কেউ তাদের খোঁজ খবর নিতেও আসনি । তারপর তামান্না খানিকটা স্বাভাবিক হলে জান-প্রাণ দিয়ে তার মায়ের খেদমত করতে লাগলো। তারপরও বেশিদিন তিনি বাঁচলেন না । মৃত্যু তাকে আলিঙ্গন করলো। সেদিন থেকে মেয়েটি একা হয়ে পড়ল । জীবনযুদ্ধে তার কোনো সঙ্গী নেই । অথৈ পৃথিবীতে

শৈশবের স্কুল জীবন - আবু তাহের ইসলাম

ছবি
শৈশব কাল কতই না সুন্দর ছিল। ছিল না কোনো চিন্তা-ভাবনা , খাওয়া-দাওয়া , খেলাধূলা আর ঘুমানো। এ সময় সন্তানকে পিতা মাতা যা শিখায় সন্তান তাই শিখে। জীবনের প্রথম স্পর্শ মায়ের কাছ থেকে পাওয়া। ছোটবেলায় সন্তান যখন কান্না করে , মা ছাড়া কেউ তার কান্না থামাতে পারে না। কারণ পিতা-মাতা সন্তানকে যেভাবে আদর যত্ন দিয়ে ভালোবাসে তেমন করে পৃথিবীর কেউ আর আদর যত্ন দিয়ে ভালোবাসতে পারে না। পিতা-মাতার কাছে সন্তানের শিক্ষা বেশি প্রয়োজনীয়। পিতা-মাতা হাতে-কলমে সব শিক্ষা দিতে না পারলেও পিতা-মাতার শিক্ষা সন্তানের জন্য আদর্শ   শিক্ষা। পিতা-মাতার কাছে সন্তান ভালো-মন্দ সব শিক্ষা পায়। কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল , কি করলে ভালো হবে আর কি করলে মন্দ হবে , সেসব শিক্ষাও পায়। শৈশবকাল সবার কাছে একরকম হয় না , কেউ পায় অবহেলা আবার কেউ পায় ভালোবাসা। আমি মা বাবার ভালোবাসা ও শাসন দুটোই পেয়েছি।   বাবারা সন্তানের ভালোর জন্য সন্তানকে শাসন করে। সারাদিন যখন বালুতে খেলা করতাম , মা প্রথমে বকা দিত তারপর গোসল করিয়ে দিত। অনেক সময় মায়ের কোলে প্রসাব করে দিতাম। তবুও মা একটুও রাগ না করে আদর করতো।   একদিকে দশ মাস দশ দিন গর্ভে থেকে মাকে কতই

স্মৃতির পাতা - সানজিদা হোসাইন

ছবি
গ্রীষ্মকাল-এর মানেই হলো স্কুলে গরমের ছুটি। আর এই ছুটি মানেই হলো নানাবাড়ি বেরাতে যাওয়ার তাড়া। কারণ এটা হলো  আম পাকার সময়। আমার নানা বাড়ি খুব বেশি দুরে না,আমার গ্রাম থেকে চার-পাঁচ গ্রাম পেছনে।আর গাড়ির সুবিধা হওয়ার খুব বেশি সময় লাগে না। তাই স্কুল বন্ধ হলেই সোজা নানাবাড়ি যেতাম।মামা-মামী, নানা-নানু,ভাইয়া আর ছোট ভাই নিয়ে আমার নানা বাড়ি।ছোটো খাটো নয়,মোটামুটি বিশাল এক বাড়ি আমার নানাভাইয়ের। মা বলে আগে আরও নাকি বড় ছিলো,বাড়ি ভাগ করায় এখন মাঝে এক দেয়াল দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের সম্পর্কে কোনো দেয়াল ওঠে নি। বাড়ির তিন দিকে শুধু আম গাছ। আম পাড়লে কেউ কিছু বলে না। তাছাড়া অন্যদের গাছের আম পেড়ে আনতাম, তারাও কিছু বলতো না।আর আমার এলাকায় যদি এমন করি তো,বাড়ি এসে মায়ের কাছে নালিশ করে যাবে।এজন্যই তো নানা বাড়ি খুব পছন্দের। কোনো বাধা নেই,ওই কটা দিন নিজের ইচ্ছে মতো কাটতো। যখন আমরা সব ভাই-বোন একসাথে হতাম সেই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।সবাই আমায় অনেক আদর করতো কারণ,আমার মা বাড়ির ছোট মেয়ে,আর আমিও সবার ছোট।পরে অবশ্য আরও মেহমান এসেছে সে অন্য কথা।বড় মামার দুই ছেলে আর ছোট মামার এক ছেলে এক মেয়ে ওরা এখন ছোট। আমরা ভাই বোন

ডিস্যালাইনেশন কি? - আব্দুর রহমান আল হাসান

ছবি
পানির অপর নাম জীবন। নামটি যথার্থ। কারণ, মানুষ পানি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারবে না। পানি মানুষকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে পানি ব্যবহার করে থাকি। পানি ছাড়া আমরা এক মুহুর্তও কল্পনা করতে পারি না। কিন্তু এই পানির উৎস কি? তা কি আমরা জানি? এ সকল পানি আসে ভূগর্ভস্থ থেকে। সেখানেই বিশুদ্ধ মিনারেল ওয়াটার পানি পাওয়া যায়। নদীর পানিও প্রকারভেদে বিশুদ্ধ হয়ে থাকে। কিন্তু সমুদ্রের পানি? এখানেই সবচেয়ে বড় অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয় আমাদের। সমুদ্রের পানিতে লবনের পরিমাণ বেশি থাকায় তা পান করার অযোগ্য। কারন, পানিগুলো বড্ড লবণাক্ত হয়। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, এটারও সমাধান আছে। বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। বিজ্ঞান আমাদের শুধু ডিভাইসই উপহার দেয় নি, দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি। বিশুদ্ধ খাবার। বিশুদ্ধ ফলমূল। তবে বিজ্ঞান আমাদের ক্ষতিও কম করে নি। যাই হোক, ক্ষতিটাকে একপাশে রেখে আমরা উপকারগুলো নিয়ে আলোকপাত করি। এই কোটি কোটি লিটার সমুদ্রের পানিকে বিশুদ্ধ করার একটা পদ্ধতি আছে। সেটার নাম, ডিস্যালাইনেশন । শব্দটা কঠিন মনে হলেও ভেবে নিন এটার পদ্ধতিটাও কঠিন। এখন কথা হলো, কিভাবে এই ডিস্যালাইনেশন

মায়াবী নদী - স্বপ্না ফাতেমা

ছবি
মিনি হঠাৎ থেমে গেল। সামনেই একটা নদী। নদীটির নাম মায়াবী নদী। ছোটবেলা থেকেই মিনি শুনে এসেছে , এই নদীর কাছে যারাই গিয়েছে তারা আর কখনো ফিরে আসে নি। কিন্তু মিনি এটা বিশ্বাস করতে চায় না। সে খুব সাহসী। মিনি তার পরিবারকে একদম পছন্দ করে না। মাঝে মাঝে তার ইচ্ছা করে দূরে কোথাও চলে যেতে। কিন্তু এতুটুকুন মেয়ে যাবেই বা কোথায়। মিনির একটা সমস্যা আছে। সে খুব জেদি। তার যখন যেটা ইচ্ছা হবে , সেটাই সে করবে। তাকে কেউ তার কথা থেকে নাঁড়াতে পারে না। মিনি মায়াবী নদীর কিনারা ধরে হাঁটতে লাগলো। নদীর দু’ধারে গাছ। প্রতিটি গাছেই রয়েছে নাম না জানা অসংখ্য পাখি। কোনো কোনো পাখি পাখা মেলে উড়াল দিচ্ছে। আবার কিছু পাখি ফিরে আসছে। মিনির চোখে পড়লো , কিছুটা দূরেই রয়েছে একটা মাঁচা। মাঁচাটি দেখে ভাবলো , এখানে তো কেউ আসেই না। তাহলে এই মাঁচা আসলো কোথা থেকে ? মাঁচাটিকে ছায়া দিয়ে বিশাল একটি বটগাছ। এত চওড়া আর লম্বা বটগাছ এই প্রথম দেখলো মিনি। মিনি মাঁচাটিতে খানিকক্ষণের জন্য বসলো। নদীর পাশের এই ঘন জঙ্গলে হয়তো ভূতেরাই বাস করে। এমনটাই ভাবলো মিনি। মিনি খেয়াল করলো , অদ্ভূত এক ঘ্রাণ তাকে মোহিত করে দিচ্ছে। সে আগে কখনো এমন ঘ্রাণ অনুভব করে